খানসামা(দিনাজপুর)প্রতিনিধি: হত্যা মামলায় কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় পরিকল্পনা করে সে অনুযায়ী জামিনে বেরিয়ে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার এক পরিবারের সদস্যদের চেতনানাশক ওষুধ দিয়ে অজ্ঞান করে ৪০ লাখ টাকা, মূল্যবান জিনিসপত্র এবং মোবাইল ফোন চুরির ঘটনা ঘটেছে।
গত মঙ্গলবার সকাল থেকে বুধবার দিবাগত রাতের যেকোন সময় উপজেলার খামারপাড়া ইউনিয়নের জমিদারনগর এলাকায় আব্দুর রাজ্জাকের বাড়িতে ঘটনাটি ঘটে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী পরিবার থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছে। জানা যায়, ভুক্তভোগী আব্দুর রাজ্জাক ও চুরির মূল পরিকল্পনাকারী ওয়াশিম হক একই পাড়ার বাসিন্দা এবং সম্পর্কে মামা-ভাগিনা।
এ ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারী ও টাকা সংরক্ষণে জড়িত ৪ জনকে আটক করেছে খানসামা থানা পুলিশ। আটককৃতরা হলো- উপজেলার খামারাপাড়া ইউনিয়নের ডাঙাপাড়া চৌধুরীপাড়ার মৃত ইছাহাক আলীর ছেলে ওয়াশিম হক(৩৮), তার শ্যালক গোবিন্দপুর গ্রামের মুন্সিপাড়ার নমির উদ্দিনের ছেলে সোহানুর ইসলাম(২২), ওয়াশিম হকের স্ত্রী মোর্শেদ বেগম ও তার শ্যালিকা পার্শ্ববর্তী বীরগঞ্জ উপজেলার খোদ্দ পলাশবাড়ী পূর্বপাড়ার আমিনুল ইসলাম ওরফে সাদ্দামের স্ত্রী মেরিনা বেগম(২৩)।
গত শুক্রবার রাতে উপজেলার জয়ন্তিয়াঘাট এলাকা থেকে ওয়াশিম হককে আটকের পর তার দেওয়া তথ্যমতে জড়িত অন্য আসামিদের আটক করা হয়। এসময় ওয়াশিম হকের শ্যালিকা মেরিনা বেগমের বাড়িতে রক্ষিত ৬ লাখ ৭৩ হাজার টাকা ও প্রয়োজনীয় কিছু কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা জানায়, হত্যা মামলায় জড়িত অভিযোগে টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে বন্দি ছিল ওয়াশিম হক। এসময় চোরচক্রের সাথে তার সখ্যতা গড়ে ওঠে। তিন মাস আগে জামিনে বেরিয়ে এসে কারাগারে পরিচয় হওয়া চোরচক্রের সাথে ফোনে যোগাযোগের মাধ্যমে চুরির পরিকল্পনা তৈরি করে ওয়াশিম। পরিকল্পনার ভিত্তিতে এ চক্রের সদস্যরা গত মঙ্গলবার উপজেলার ডাঙাপাড়া চৌধুরীপাড়ায় ভুক্তভোগী আব্দুর রাজ্জাকের রান্নাঘরে লবণ ও হলুদের সাথে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে পরিবারের সকল সদস্যকে অজ্ঞান করে। পরে ভুক্তভোগীর শয়নকক্ষের ড্রয়ার থেকে অর্থ ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চুরি করে ওয়াশিমসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজন ভাগ করে নেয়। পরে ওয়াশিম টাকা সংরক্ষণের জন্য পরিবারের সদস্যদের ব্যবহার করে।
ভুক্তভোগী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, তার ব্যবসা ও কৃষিপণ্য বিক্রির প্রায় ৪০ লাখ টাকা চুরি হয়েছে। সবকিছু হারিয়ে এখন প্রায় নিঃস্ব তিনি। জড়িতদের আটক করায় থানা পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং জড়িত সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও পুরো টাকা উদ্ধারের দাবি জানান তিনি।
এ বিষয়ে খানসামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মোজাহারুল ইসলাম বলেন, এই চুরির ঘটনার পর থেকে থানা পুলিশ রহস্য উন্মোচনে কাজ করছে। বিভিন্ন তথ্য ও প্রমাণের ভিত্তিতে নগদ ৬ লাখ ৭৩ হাজার টাকা উদ্ধারসহ মূল পরিকল্পনাকারী ওয়াশিম হকসহ ৪ জনকে আটক করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। চুরিতে জড়িত অন্যদের আইনের আওতায় আনতে থানা পুলিশ কাজ করছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।